Wednesday, August 22, 2018

Ee

♥ Eid Day special ♥
,
#বউয়ের_মিষ্টি_ভালবাসা
.
.
.
.
-একটা কথা কতবার বলতে হয় তোমাকে?(শুভ্র)
-কতবার বলেছ শুনি?মাত্র তো সতেরবার হল।(ইরা)
-উফফ তুমি একটা পেইন বুঝলে।
-বিয়ের আগে হুশ ছিল না হি হি হি।
-বাবু প্লিজ বোঝার চেষ্টা কর,খুব ক্লান্ত লাগছে এখন কিছুতেই শ্বশুর বাড়ি যেতে পারব না।
-আমি কিছু জানিনা।আসতে তো তোমাকে হবেই।
-আমি পারবনা।
-পারতে তোমাকে হবে।
-দেখ ইরা একেবারে ছেলেমানুষি করবা না।তুমি খুব ভালভাবে জান আমি এখন কতটা ক্লান্ত এই অবস্থায় এতটা পথ আসতে পারব না।
-প্লিজ বাবু একটু কষ্ট করে এস,একটা সারপ্রাইজ দিব।
-বাবু প্লিজ জোর কর না। আমি রাখতে পারব না।
-আসতে পারবে না তো?বেশ ভাল আমিও আর আসব না।
-আসব না মানে কি?আর কোথায় আসবে না?
-আসব না তোমার বাড়ি।
-কেন আমার বাড়ি আবার কি দোষ করল?
-তুমি খুব পঁচা।
-হুম পঁচা থাকাই ভাল।
-তুমি একটা স্বার্থপর।
-হুম বেশি ভাল হলে সমস্যা আছে।
-তুমি একটা.......
-আমি একটা কি?
-আমার মাথা।
-হুম ভাল।এই লক্ষী মেয়ের মত খেয়ে ঘুমিয়ে পড়।
-আমি খাব কি খাব না,আর ঘুমাব কিনা কাউকে বলতে বলিনি।
-তাই?
-হুম।
-রাগ করেছ?
-আজিব আমার রাগ এত সস্তা না।
-ভাল।তাহলে রাখি।
-রাখি মানে কি?তুমি ফোন রাখলে আর কখনও আমায় দেখতে পাবে না।
-বাবু এমন করনা।প্লিজ বোঝার চেষ্টা কর।আমি এখনো ফ্রেশ হয়নি।
-আমি কিছু বুঝতে চাই না তুমি আসবে।
-ধ্যাত এক কথা বারবার বলতে ভাল্লাগে না।(একটু ধমকের সুরে বললাম)
-তুমি আমাকে বকা দিতে পারলে?
-এটা বকা নয় বোঝার চেষ্টা কর।
-থাক আর বোঝাতে হবে না।আমি বুঝেছি।
-কি বুঝেছ?
-এখন আর আমাকে ভাল লাগে না।
-কচু বুঝেছ।
-বললেই পারতে আমাকে আর দরকার নেই।
-দেখ ইরা প্লিজ বুঝ আমায় আমি ওটা বলিনি।
-থাক আর কিছু বলতে হবে না।ভাল থেক আর সময়মত খাওয়া দাওয়া কর।আর হ্যা ঠিকমত ঔষধ খেও।বাই(কাদতে কাদতে কথাগুলো বলল)
-বাবু শোন.....
টুট টুট টুট....
আমি কল দিলাম,ফোন অফ বলছে।
একেবারে পাগলী বউ।তিনদিন হল বাপের বাড়ি গিয়েছে।প্রতি মূহুর্তে তাকে নোটিশ করা লাগে কি করছি খেয়েছি কিনা ইত্যাদি।আজকে সন্ধ্যা হতেই বায়না ধরেছে তার কাছে যেতে হবে।কি একটা সারপ্রাইজ দিবে।এত ঘ্যান ঘ্যান করে যে বিরক্ত লাগে তাই তো জোরে কথা বলতেই কেদে ফোন কেটে দিল।প্রচন্ড আবেগী বলে মনে হলেও শাষনের সময় সাক্ষাত দস্যিরানী।রাস্তায় যদি কখনও বের হই চোখটা তার দিকে রাখতে হবে নতুবা নিচু করে পথ দেখে চলতে হবে।পাশের ফ্লাটে এক সুন্দরী ভাবীকে চায়ের আমন্ত্রন জানিয়েছিলাম,আর কি দুইদিন নির্বাসন হয়েছিল সোফায়।তবে ভালবাসার একটু কমতি নেই ওর মধ্যে।একটা মেয়ে এতটা ভাল কিভাবে হয়,এতটা কিভাবে বুঝে আমি কি চাই।সত্যিই চলার পথে এমন একজনকে পেয়েছি যে আমাকে আমার মত করে বোঝে।
পাগলীটাকে তো কাদিয়ে দিলাম,জানি রাতে না খেয়ে থাকবে।কিন্তু আমি সত্যিই খুব ক্লান্ত।যদিও শ্বশুর বাড়ি দূরত্বটা বেশি নয় তবুও কেমন যেন যেতে মন চাইছে না।নাহ অন্য নারীর প্রতি আসক্ত নই ওকে ছাড়া থাকতে আমারও কষ্ট হয় কিন্তু তবুও অফিসের কাজে সময় দিতে পারি না।
.
প্রায় তিনমাস আগে,
লেখাপড়া শেষ করে মাত্র একটা জব পেয়েছি।শুরু হল মায়ের প্যানপ্যানানি বোনেন অত্যাচার,বাবার জ্ঞানী কথা।চাপে পড়ে মায়ের পছন্দের মেয়েকে বিয়ে করতেই হল।ভেবেছিলাম এখনকার দিনে ভাল মানে মনটা সরল এমন কোন মেয়ে পাওয়া দুষ্কর।তাছাড়া আমি এমনিতেই প্রচন্ড আবেগী একটা ছেলে আমি।আমাকে বোঝার মত এখনকার সময়ের স্মার্ট মেয়েরা ক্ষাৎ বলেই জানবে।ভয়ে ছিলাম যদি মেয়েটি তেমন কিছু একটা হয়।কিন্তু বাসর রাতে সালাম,ওর মুখের কথাগুলো ওর ব্যাবহার সবকিছু দেখে মুগ্ধ হয়ে বিশ্বাস করে ফেলেছিলাম।এখন চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করে আমি ঠকিনি বিশ্বাস করে।আমি এমন একজনকে পেয়েছি যা কিনা আমার জীবনে অতিমূল্যবান।
আর ওর সবথেকে ভাল দিকগুলো হচ্ছে,আব্বু আম্মুর যত্ন নিবে,আমাদের সবার প্রতি খেয়াল রাখে।তাছাড়া দিনের শেষে একমুঠো ভালবাসা নিয়ে আমার বুকে মাথা লুকাবে।সত্যিই আম্মুর কথা ঠিক ছিল এমন লক্ষী মেয়ে আর পাওয়া যাবেনা।আমি এখন বুঝি এই মেয়েটি আমার জীবনের কতটুকু জায়গা জুড়ে আছে।সত্যিই ততটা ভালবাসি ওকে যতটা সাগর বিশাল।
.
এই যা কাহিনী বলতে বলতে রাত নয়টা।এখন কি হবে।পাগলীটা তো না খেয়ে আছে মনে হয়।ফোনটা এখনও অফ।না আর দেরি করা ঠিক হবে না।
তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে আম্মুকে বলে বেরিয়ে পড়লাম।
ধ্যাত রাস্তাগুলায় মশার যে কি প্রভাব।সেই কখন থেকে দাড়িয়ে আছি খালি রিকশা নাই।অবশেষে সাড়ে নয়টা বাজলে একটা রিক্সা পেলাম।দশটা বাজলে পৌছে গিয়ে ভাড়া মিটিয়ে ফিরতে যাব মোবাইলে টুং টাং আওয়াজ হল।একটা মেসেজ এসেছে নাম্বার বউ লিখে সেইভ করা।মেসেজে লিখা..
জানি এখন আমি অনেক দূরের একজন।জানি আমাকে মনে রাখার মত কোন স্মৃতি নেই,জানি আমার জন্য আর ভালবাসা অবশিষ্ট নেই তবু যদি একবার এসে আমার হাতের পায়েসটা খেয়ে যেতে আমার আর চাওয়ার কিছু থাকত না।প্রথমবার তোমার জন্য বানিয়েছিলাম তুমি আস নি।আজ সারা রাত খুব কাদব।
মেসেজটা পড়ে মুচকি হাসলাম।এবার আমি রিপ্লে দিলাম,পাগলী মেয়ে চাবি নিয় আস তোমার জামাই বাইরে দাড়িয়ে পায়েস খাবে।
সেন্ট ডেলিভারি হতেই ত্রিশ সেকেন্ডে দরজা খুলে গেল।
আহারে বউ যে কেদে কেদে চোখ ফুলিয়ে ফেলেছে।
-এখন কেন এসেছ?(ইরা)
-কেন শ্বশুর বাড়ি আসতে নির্দিষ্ট সময় লাগে নাকি?
-জানি না।খেয়েছ?
-না।তুমি?
-না।
-দাও দেখি পায়েস দাও।খেয়ে দেখি বউ আমার কেমন রাধতে পারে।
-না দিব না।
-কেন গো এখনও রেগে আছ?
-না আমি রাগ করি না।
-তাহলে অভিমান হয়েছে?
-জানিনা।ফ্রেশ হয়ে এস টেবিলে খাবার দিচ্ছি।
-না যাব না।আগে পায়েস খাব।
-বললাম তো ফ্রেশ হয়ে এস।
-না এক্ষুনি দাও।
-হবে না আগে ফ্রেশ হতে হবে।
-বাবু প্লিজ।
-না হবে না।
কি আর করা দুইমিনিটে ফ্রেশ হয়ে এসে বসে পড়লাম।পায়েসের বাটি সামনে রাখা।
-কি গো খাইয়ে দাও।
-কেন তুমি নিজে খেতে জান না।
-জানি তো কিন্তু এখন খাবন না।তোমার হাতে খাব।
-পারব না।
-কেন?দাওনা খাইয়ে।
-বকা দিয়েছিলে কেন তখন?
-কই বকা দিলাম।আমি তো একটু.....
-থাক আর বলতে হবে না।তাড়াতাড়ি খেয়ে বিদায় হও।
-বিদায় হব মানে?
-আমাকে বকা দেওয়ার জন্য এটা তোমার শাস্তি এখন তোমায় বাসায় ফিরতে হবে।
-প্লিজ এবারের মত মাফ করে দাও।এখন এত রাতে রিক্সাও পাব না।
-তো আমি কি করব?
-একটু থাকতে দিবে।
-হবে না।
-প্লিজ।
-না।
বাচ্চা ছেলের মত চোখে পানি নিয়ে খাওয়া শেষ করে উঠে পড়লাম।
-আসি বাবু।(আমি)
-হুম যাও।
-সত্যিই যাব।
-হুম যাও তো।
-শুভরাত্রি।(বলে দরজার দিকে পা বাড়ালাম)
হঠাৎ কেউ একজন এসে জড়িয়ে ধরল।
-এই পাগলী কাদছ কেন?
-তুমি এত বোকা কেন?আমি যেতে বললে যেতে হবে।কোন অধিকার নেই তোমার।
-আছে তো ভালবাসার অধিকার।
-বুদ্ধু একটা।
-হুম।
-তুমি এত পচা কেন?
-আবার কি করলাম।
-আমাকে জড়িয়ে ধর।
-পাগলী একটা।
-হুম তোমারই তো।।


SHARE THIS

0 comments: